আপনাদের সকলকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমাদের আজকের এই অনুচ্ছেদে। সচরাচর আমরা টেকনোলজির সম্পর্কিত তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করি। কিন্তু আজকে লিখতে চলেছি আপনাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে মেহেরপুর টু ঢাকা বাসের সময়সূচী। এখান থেকে আপনারা জানতে পারবেন মেহেরপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যে সকল বাসগুলো ছেড়ে আসে সে বাসগুলো সময়সূচী সম্পর্কে।
আপনারা আরও জানতে পারবেন বাসগুলো কখন এসে ঢাকাতে পৌঁছেছে এবং বাসগুলোর ভাড়া কেমন হতে পারে। এতে কোম্পানিভেদে এসি এবং ননএসি ভেদে ভারার পার্থক্য হয়ে থাকে। চলুন আমরা আজকের এই পোসটের মূল আলোচনার বিষয় এর দিকে অগ্রসর হই।
মেহেরপুর টু ঢাকা বাস
মেহেরপুর বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের একটি শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি খুলনা বিভাগের মেহেরপুর জেলার সদর দপ্তর। এর আয়তন 15.9 বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা 43, 133 জন। এটি একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। মেহেরপুর নামকরণের পিছনে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে ঐতিহাসিক কুমুদনাথ মল্লিক এর মতে কেহ কেহ এই স্থানটিকে মিহিদানার বাসস্থান বলিয়াও নির্দেশ করেন এবং মেয়ের নাম হইতে মিরপুর অপভ্রংশ মেহেরপুর কল্পনা করেন।
নামকরণ সম্পর্কিত এ ধারণাটি অনুমান ও কল্পনা নির্ভর। নামকরণ নিয়ে আরো একটি মতামত রয়েছে ডঃ আশরাফ সিদ্দিকীর মতে 600 শতাব্দীর একজন দরবেশ মোহর আলী শাহ এর নামে এই অঞ্চলের নামকরণ হয়েছে। মেহেরপুর একটি প্রাচীন জনপদ ছিল। সতী 1965 সালে কোম্পানি কর্তৃক দেওয়ানি লাভ এর ফলে মেহেরপুরেও চলে যায় কম্পানি শাসনে। 1727 সালে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নদীয়ার গদিনশীন হন। এই নদীয়ার অন্যতম চলছিল মেহেরপুর এবং রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শাসনাধীনে মেহেরপুর দীর্ঘদিন শাসিত হয়েছে। 1984 সালের 24 ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর জেলা শহরের মর্যাদা লাভ করে।
মেহেরপুর জেলায় তিনটি নদী রয়েছে নদীগুলো হচ্ছে ভৈরব নদ, মাথাভাঙ্গা নদী ও কাজলা নদী। নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীর ইতিহাস আর বাঙালির ইতিহাস মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। মেহেরপুর অঞ্চলের প্রধান প্রধান বেগবতী সব নানাবিধ ভূ–প্রাকৃতিক কারণে নাব্যতা হারিয়ে মৌসুমী জলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এ অঞ্চলের ভাগ্যবঞ্চিত শোষিত নিপীড়িত জনগণের শোষণ বঞ্চনা ও লড়াই সংগ্রামের সঙ্গে এসব নদী জাগ্রত মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
একদা শুধুমাত্র নদীপথে ছিল সমগ্র ভারতের সঙ্গে মেহেরপুরের যোগাযোগ। কথিত আছে 1589 সালে মুঘল সেনাপতি মানসিংহ যশোরের প্রতাপাদিত্যকে দমন করার জন্য নদীপথে মেহেরপুরের বাগানে এসে ভবানন্দ মজুমদারের সহযোগিতা গ্রহণ করেন এবং যশোর জান।
মেহেরপুরের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ ও ঐতিহাসিক আম্রকানন, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স, মেহেরপুর শহীদ স্মৃতিসৌধ, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, আমঝুপি নীলকুঠি, ভাটপাড়া নীলকুঠি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
মেহেরপুর টু ঢাকা স্থলপথ এর রাস্তার দূরত্ব প্রায় 250 কিলোমিটার। এটি অনেক বড় একটি রাস্তা। এ রাস্তাতে অনেকে বাসে যাতায়াত করে। বেশিরভাগ মানুষ এই জেলাতে আসে পর্যটক হিসেবে। এছাড়াও সেখানকারই স্থায়ী জনগণ তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেক সময় ঢাকা জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বা যাতায়াত করে। এভাবে ঢাকা থেকে মেহেরপুর এর মধ্যে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। বাস এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটামুটি ভালো একটি পর্যায়ে রয়েছে।
মেহেরপুর টু ঢাকা বাসের সময়সূচী
এখন আমরা এ পর্যায়ে মেহেরপুর থেকে ঢাকায় যে সকল বাস চলাচল করে তাদের ছাড়ার সময় এবং ঢাকাতে পৌছানোর সময় নিয়ে আলোচনা করব। আমরা চেষ্টা করেছি সঠিক তথ্যগুলো সংগ্রহ করে আপনাদের জন্য সুন্দরভাবে সাজানোর। এই তথ্যগুলো আশাকরি আপনাদের অনেক কাজে আসবে।
সকালের বাসের সময়সূচী
- এস বি সুপার ডিলাক্স মেহেরপুর টু ঢাকা রুটে তাদের অনেক ভালো বাস রেখেছে। তাদের একটি বাস রয়েছে যেটি সকাল 6 টা 55 মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে এবং ঢাকা কাউন্টারের দুপুর 12 টা 10 মিনিটে তার যাত্রা শেষ করে। এই বাসটির কোচ নাম্বার 606 এবং এটি একটি এসি বাস।
- এস বি সুপার ডিলাক্স কোচ নাম্বার 609 মেহেরপুর টু ঢাকা রুটে তাদের আরও একটি বাস চালু রেখেছে। এই বাসটি মেহেরপুর হয়ে কুষ্টিয়া এবং কুষ্টিয়া থেকে ভেড়ামারা হয়ে ঢাকা কাউন্টার তার যাত্রা শুরু করবে সকাল 8 টা 30 মিনিটে। এবং ঢাকা কাউন্টারের তার যা্এা শেষ করবে বিকেল 3:30 মিনিটে। এটি একটি নন এসি বাস সার্ভিস।
- মেহেরপুর টু ঢাকা এই রোডে শুধুমাত্র এস বি সুপার ডিলাক্স সারাদিন এবং রাতে তাদের অনেকগুলি বাস সার্ভিস চালু রেখেছে। এস বি সুপার ডিলাক্স কোচ নাম্বার 612 এই বাসটি মেহেরপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে তার যাত্রা শুরু করবে সকাল 10:30 এ এবং ঢাকা কাউন্টারের যাত্রা শেষ করবে বিকেল 5 টা 30 মিনিটে। এটি একটি নন এসি বাস সার্ভিস।
দুপুরের বাসের সময়সূচী
- দুপুরবেলা তে যারা যাত্রা করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এস বি সুপার ডিলাক্স কোচ নাম্বার 615 নিয়ে এসেছে মেহেরপুর টু ঢাকা এই রোডে একটি এসি বাস। এই বাসটি দুপুর 1 টা 10 মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। বাসটি রাত 7:10 এ এসে ঢাকা কাউন্টারের যাত্রা শেষ করে। আপনারা চাইলে খুব আরামদায়ক ভাবে এই বাসটিতে আপনার যাত্রা সম্পূর্ণ করতে পারেন।
রাতের বাসের সময়সূচী
- রাতে এস বি সুপার ডিলাক্স কোচ নাম্বার 622 নিয়ে এসেছে তাদের মেহেরপুর টু ঢাকা বাস সার্ভিস। এ সার্ভিসে তারা মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া এবং কুষ্টিয়া থেকে ভেড়ামারা হয় ঢাকামুখী বাস এর মাধ্যমে মেহেরপুর থেকে ঢাকা সার্ভিস দিচ্ছে। এই বাসটি একটি এসি বাস যা রাত 9:10 এ ঢাকার উদ্দেশ্যে মেহেরপুর থেকে ছেড়ে আসবে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে ভোর 4 টা 10 মিনিটে।
- এস বি সুপার ডিলাক্স রাতে আরো একটি বাস সার্ভিস চালু রেখেছে। এই বাসটি মেহেরপুর থেকে ছাড়বে রাত 9:40 মিনিটে এবং ঢাকাতে পৌঁছাবে ভোর 4 টা 40 মিনিটে এটি একটি এসি বাস। এর কোচ নাম্বার 637।
মেহেরপুর টু ঢাকা বাসের ভাড়া
এতক্ষণ আমরা মেহেরপুর টু ঢাকা বাসের সকল সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করলাম। এ পর্যায়ে আমরা লিখতে চলেছি বাসের ভাড়া সম্পর্কে। এখানে মূলত আমরা বাসের টিকিট মূল্য উল্লেখ করব। ভিন্ন ভিন্ন টিকিট মূল্য রয়েছে। চলুন আলোচনা করা যাক।
নন এসি বাসের ভাড়া
- মেহেরপুর টু ঢাকা এই রুটে শুধুমাত্র এস বি সুপার ডিলাক্স ইন্টার প্রাইজের একটি নন এসি বাসের তথ্য আমরা পেয়েছি। এই নন এসি বাস টিকিট মূল্য ধরা হয়েছে 480 টাকা।
এসি বাসের ভাড়া
- মেহেরপুর টু ঢাকা রুটে অনেকগুলি বাস কোম্পানি তাদের এসি বাস চালু রেখেছে। আরামদায়ক যাত্রার জন্য অনেকেই এসি বাস পছন্দ করেন এবং এসির জন্য অতিরিক্ত ভাড়া দিতে পছন্দ করেন। এস বি সুপার ডিলাক্স যেসকল এসি বাস এ রুটে চলে তার প্রতি টিকিট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে 900 টাকা। আপনি যদি মেহেরপুর থেকে ঢাকা এসি বাসে আপনার যাত্রা শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে 900 টাকা খরচ করতে হবে।
মেহেরপুর টু ঢাকা বাসের অনলাইন টিকিট
এই প্রশ্নটিই অনেকের রয়েছে আপনারা কিভাবে বাসের টিকিট অনলাইন থেকে কাটতে পারবেন আমরা আমাদের প্রত্যেকটি অনুচ্ছেদে তার একটি ধারণা আপনাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও যারা নতুন রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই।আমরা এখন এই অংশে দেখাবো আপনি কিভাবে অনলাইন থেকে মেহেরপুর টু ঢাকা বাসের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন।
- আপনি আপনার ডিভাইস থেকে প্রথমে যেকোন ব্রাউজার ওপেন করে shohoz.com এ প্রবেশ করুন। আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে shohoz.com অ্যাপস ডাউনলোড করেও এ কাজটি সম্পূর্ণ করতে পারেন।
- এর পরে আপনি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে সেখানে আপনাকে কয়েকটি অপশন দেখাবে। আপনি আপনার যাত্রা শুরুর স্থান এবং যাত্রার শেষের স্থান উল্লেখ করুন এর সঙ্গে আপনার যাত্রা তারিখ উল্লেখ করে সার্চ করুন।
- সার্চ করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার সামনে অনেকগুলোই বাসের লিস্ট চলে আসবে। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী বাস সিলেক্ট করুন এবং পরবর্তীতে বাসের সিট সিলেক্ট করুন।
- সর্বশেষ ধাপে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে সিটের টাকা পেমেন্ট করতে হবে। এর জন্য আপনি অনেকগুলো অপশন পাবেন। আপনি বিকাশের মাধ্যমে কিভাবে অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন সে সম্পর্কিত তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন।
- আপনি পেমেন্ট সম্পন্ন করলে আপনার বাসের টিকিট কাটা হয়ে যাবে। আপনি যাত্রা শুরুর সময় অবশ্যই বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করে টিকিট এর মূল কপি হাতে নিয়ে নিন। এভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি টিকিট কাটতে পারেন।