আমাদের এই পোস্ট থেকে আপনারা জেনে নিন কিভাবে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে হয়। আমরা আজকে জানাবো ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার নিয়ম 2023 সম্পর্কে। অনেকেরই ট্রেনে যাত্রা করতে হয় সে ক্ষেত্রে সব সময় টিকিট পাওয়া সহজ একটি ব্যাপার না। তাই অনেকেই মনে করেন যদিও অগ্রিমে বা আগে থেকে ট্রেনে টিকিট কেটে রাখা যায় তাহলে সেটি খুব ভালো হয়। তাই সকলেই ইচ্ছে করে ট্রেনের আগাম টিকিট কেটে রাখেন। ছাড়াও কিছু কিছু বিশেষ মুহূর্তে ট্রেনের টিকিট পাওয়া খুব দুষ্কর হয়ে যায় তাই সকলেই আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কাটতে ইচ্ছা পোষণ করেন। বিশেষ করে ঈদের সময় বাংলাদেশের ট্রেনের টিকিট পাওয়া খুব কষ্টের। ইচ্ছে করে অনেক আগে থেকে টিকিট কেটে রাখেন।
আপনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা ট্রেনে যাতায়াত করেন। অনেকেই গ্রামের বাড়িতে আসার সময় ট্রেনে যাতায়াত করেন। অনেকে আবার বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের রাস্তার বেছে নেন। যাতায়াতের জন্য অন্যান্য মাধ্যম থাকলেও ট্রেনে যাতায়াত অনেক আনন্দদায়ক এবং উপভোগ পূর্ণ হয় তাই অনেকেই সবার প্রথমে ট্রেনের যাত্রা তাই বেছে নেন। কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশ ট্রেন সেবার দায়িত্ব সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের ওপর তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্রেনের ব্যবস্থা নেই তাছাড়াও বিশেষ কিছু দিনগুলিতে ট্রেনের সংকট দেখা যায়।
আর এই সংকটের কারণে আমরা ইচ্ছে করলেও ট্রেনের যাত্রা করতে পারিনা। কারণ টিকেট ছাড়া যদি আমরা ট্রেনে যাত্রা করি তাহলে আমাদের তিনগুণ বেশি জরিমানা গুনতে হয়। আর আমরা যারা দালালের পাল্টে পড়ে টিকিট কাটে তাদের কেউ প্রায়ই ডাবল ভাড়া দিয়ে টিকিট কাটতে হয়। এই সব কিছুর একটি সমাধান হলো অগ্রিম ট্রেনের টিকিট কাটা।
আপনারা অনেকে জানেন অগ্রিম ট্রেনের টিকিট কাটা যায় কিন্তু কিভাবে কাটতে হয় সেই পদ্ধতি বা কখন কাটতে হয় সেই পদ্ধতি আপনার জানা নেই। আমরা আমাদের সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদ এর মাধ্যমে আজকে আপনাদের সামনে যানাতে যাচিছ কিভাবে একজন ব্যক্তি ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে পারবে।
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বলতে কী বোঝায়
অনেকেই রয়েছে তারা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বলতে বোঝে না। তারা মূলত সরাসরি স্টেশনে গিয়ে ট্রেন আসার পূর্বেই ট্রেনের টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠার অভ্যাস রেখেছেন। যার কারণে তারা জানেন না। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটা বলতে আপনার যাত্রার নির্দিষ্ট তারিখ এর পূর্বে ট্রেনের টিকিট কেটে রাখার নিয়ম কে বোঝায়।
বর্তমানে বাংলাদেশে যে রেল সেবা চালু রয়েছে সেই সেবায় আপনি ইচ্ছে করলে 5 দিন আগে আপনার অগ্রিম টিকিট কেটে রাখতে পারেন। কোন কোন ক্ষেত্রে এই অগ্রিম টিকিট দশ দিন আগেও কাটা যায়। সরকার বা রেল কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে এই সুবিধা দিয়ে থাকে বিশেষ বিশেষ কারণ বশত। যাত্রাপথের শুরুর আগে থেকেই টিকিট কেটে রাখাকেই ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটা বলে।
আপনি কোন কোন উপায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কেটে রাখতে পারবেন
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে যার দরুন আপনি ট্রেনের টিকিট অগ্রিম কাটতে পারেন। আপনি নিয়মিতভাবে টিকিট কাটার যে নিয়ম রয়েছে সেটা অনুসরণ করেই আপনাকে অগ্রিম টিকিট কাটতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনাকে একটু ভিন্ন রাস্তা অবলম্বন করতে হবে যাতে করে আপনি অগ্রিম টিকিট কাটতে পারেন। এখন অনেকেই মনে করেন যে অগ্রিম টিকিট কাটা 24 ঘন্টায় সম্ভব।
কিন্তু আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এবং রেলওয়ে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানতে পেরেছি যে অগ্রিম টিকিট কাটার অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু সময় রয়েছে। আপনারা কিভাবে কোন সময় রেইল অগ্রিম টিকিট কাটবেন তা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হলে অবশ্যই আমাদের নিচের অংশটুকু গুরুত্ব সহকারে দেখুন। কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে কমেন্ট বক্সে অবশ্যই কমেন্ট করবেন এবং প্রশ্ন করবেন আমরা চেষ্টা করব আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে।
সরাসরি স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে উপস্থিত হয়ে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কেনা
- আপনি যদি সরাসরি স্টেশনে উপস্থিত হন ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে সুবিধা বলে মনে করেন তাহলে আপনি কাঁটতে পারেন। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিক সময়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে উপস্থিত হতে হবে।
- ট্রেনের স্টেশন এগিয়ে অগ্রিম টিকিট কাটার সময় শুরু হবে বিকেল 4 থেকে। বিকেল 4 থেকে শুরু হওয়ার কারণ হল সকালের দিকে স্টেশনে অনেক বেশি ভিড় থাকে এবং তখন রানিং ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়। যার কারণে বিকেলের দিকে ফাঁকা স্টেশনে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম বিক্রি করা সুবিধাজনক হয়।
- আপনি স্টেশনে উপস্থিত হয়ে স্টেশনের নোটিশ বোর্ডে লক্ষ্য করুন। সেখানে অবশ্যই উল্লেখ করা থাকবে আপনি কোন কাউন্টারে গেলে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট পাবেন। সেই কাউন্টারে উপস্থিত হন।
- কাউন্টারে উপস্থিত হয়ে আপনি টিকেট বিক্রেতাকে আপনার যাত্রার তারিখ এবং যাত্রা শুরু ও শেষ স্থান উল্লেখ করুন। আপনাদের সুবিধার্থে একটি বিষয়ে খুব ভালোভাবে বলে দেই ট্রেনের অগ্রিম টিকিট আপনি সর্বোচ্চ 5 দিন আগে কিনতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ বলতে গেলে বলতে হয় আপনি যদি 6 তারিখে যাত্রা করতে চান তাহলে আপনি এই অগ্রিম টিকিট 1 তারিখ হতে কিনতে পারবেন।
- এরপরে টিকিট বিক্রেতা আপনাকে ট্রেনের নামগুলো বলবে এবং সময় উল্লেখ করে দিবে। আপনি নির্দিষ্ট ট্রেন নির্বাচন করে দিবেন এবং আপনার কতটি সিট প্রয়োজন সেটি তাকে বলে দিবেন।
- ট্রেন বিক্রেতা টিকিট কাটা সম্পন্ন করে টিকিটের মূল্য আপনার কাছে চাইবে। আপনি টিকিটের মূল্য পরিশোধ করে স্টেশন ত্যাগ করার পূর্বে একবার টিকিটটি ভালো করে লক্ষ্য করে নিবেন।
- এই হল সরাসরি স্টেশনে উপস্থিত হয়ে ট্রেনের টিকেট কাটা। এই পদ্ধতিতে যে কেউ টিকিট কাটতে পারে তবে এটি অনেক সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য একটি প্রক্রিয়া।
অনলাইনের মাধ্যমে ই–টিকিটিং সিস্টেমে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটা
- আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে ই–টিকিটিং–সিস্টেম ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে চান তাহলে আপনার প্রয়োজন পড়বে একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন অথবা একটি কম্পিউটার সেট। আপনাকে অবশ্যই এই ডিজিটাল ডিভাইস গুলোতে ইন্টারনেট কালেকশন রাখতে হবে।
- টিকিট কাটার পূর্বে আপনাকে দুইটা বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে। আপনি সর্বোচ্চ 5 দিন আগে আপনার ট্রেনের টিকিট অগ্রিম কাটতে পারবেন। অনলাইনে টিকিট কাটার সময় হল ভোর 6:00 থেকে রাত্রি 8.00 পর্যন্ত।
- আপনি আপনার ডিজিটাল ডিভাইস গুলো দিয়ে একটি ব্রাউজার ওপেন করে সেখানে বাংলাদেশের রেলওয়ে অফিশিয়াল ওয়েবসাইট সার্চ দিয়ে সে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরে আপনাকে আপনার ই–মেইল নম্বর , ফোন নম্বর এবং এনআইডি কার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে একটি আইডি খুলতে হবে।
- এর পরে আপনি পারচেস টিকেট এই অপশনটি তে প্রবেশ করুন। প্রবেশ করার পরে আপনাকে চারটি বিষয় সিলেকট করে দিতে হবে। প্রথমটি তে আপনি আপনার যাত্রা শুরুর জায়গার নাম এবং যাত্রা শেষ জায়গার নাম উল্লেখ করুন। এর পরে আপনি উল্লেখ করুন আপনি কোন তারিখে যাত্রা করবেন। এরপরে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে আপনি কতটি সিট নিবেন এবং কোন শ্রেণীর সিট নেবেন।
- আপনি এগুলো সিলেক্ট করার পরে পরবর্তী অপশনে প্রবেশ করবেন যেখানে আপনার ট্রেনের লিস্ট দেখতে পাবেন। আপনি আপনার সুবিধামতো ট্রেন সিলেক্ট করুন এবং সিট নির্বাচন করুন এবং ওকে করুন।
- এরপরে আপনাকে ট্রেনের টিকিটের মূল্য পেমেন্ট করতে হবে। বিকাশ ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংক রকেট ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং ভিসা কার্ডের মাধ্যমে আপনি আপনার ট্রেনের টিকিটের মূল্য পরিশোধ করতে পারেন। মূল্য পরিশোধের নিয়ম সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে রয়েছে।
- এরপরে আপনার আইডির ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করে আপনার টিকিট ডাউনলোড করে নিন। যাত্রা শুরুর সময় অবশ্যই টিকিটের প্রিন্ট কপি সঙ্গে রাখবেন।
এই হলো আপনি কিভাবে অগ্রিম ট্রেনের টিকিট কাটবেন তার পদ্ধতি। আপনি আপনার সুবিধা ও পছন্দ অনুযায়ী এই দুইটি পদ্ধতি যেকোনো একটি পদ্ধতি অবলম্বন করে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে পারেন। আশা করবো এখন থেকে আপনারা নিজেই ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটবেন এবং কোন দালালের পাল্টে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।